চোখে জল আসার মতো এক অসহায় এতিমের করুণ কাহিনী!

রাণীনগর (নওগাঁ): চোখে জল আসার মতো এক অসহায় এতিমের করুণ কাহিনী! মা-বাবা হারা ১০ বছরের শিশু রফিকুল ইসলামের ঠাঁই হয়নি আপন বড় ভাই ও ভাবির সংসারে। অনেক মিনতি করেও ভাই-ভাবির কঠিন মনকে গলাতে পারেনি হতভাগা এই শিশু।

বাবা-মা’র মৃত্যুর মাত্র এক বছরের মাথায় তার খাওয়া-পরার দায়িত্ব না নিয়ে অজানার উদ্দেশে ট্রেনে তুলে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চেয়েছিল বড় ভাই শফিকুল। কিন্তু বিধিবাম। রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-মামুন শিশুটিকে রাণীনগর নিয়ে আসার সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন- এমনটাই অভাস পাওয়া যাচ্ছে।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবাণীপুর গ্রামের মৃত বাদেশ মন্ডলের ছোট ছেলে রফিকুল ইসলাম। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই রাজমিস্ত্রি শফিকুল ইসলামের কাছে থাকত। বাবা মারা যাওয়ার পর রাজমিস্ত্রি কাজ করার কারণে গ্রামের বাড়ি থেকে রাণীনগর উপজেলা সদরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ভাই-ভাবি ও রফিকুল থাকত।

অভাব-অনটনের সংসারে তাকে দেখাশোনার জন্য শফিকুলের স্ত্রী মাঝে মধ্যেই মানসিকভাবে নির্যাতন করত। এ নিয়ে ভাই-ভাবির মধ্যে সব সময় কলহ লেগেই থাকত। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে ভাই-ভাবি মিলে হুমকি-ধমকি দিয়ে শিশু রফিকুলকে অজানার উদ্দেশে একটি ট্রেনে তুলে দেয়। ওই দিন রাত ১১টায় রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর রেলওয়ে স্টেশনে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর শিশুটি স্টেশনে ঘোরাফেরা করতে

দেখে স্থানীয় সোনার বাংলা ক্রিয়া সংস্থার আহ্বায়ক এস এম হেলাল খন্দকার তার হেফাজতে নিয়ে রবিবার দুপুরে শিশু রফিকুলকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট নিয়ে গেলে তার নাম ঠিকানা জেনে বালিয়াকান্দি ইউএনও আম্বিয়া সুলতানা রাণীনগর ইউএনও আল-মামুনকে জানালে তার ঠিকানা নিশ্চিত করে শিশুটিকে নিয়ে আসার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান।

রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান জানান, শিশুটির মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। বড় ভাইয়ের কাছেই থাকে। তাদের অভাবের সংসার বড় ভাইটিও শারীরিকভাবে অক্ষম। শিশুটিকে নিয়ে ভাই-ভাবির মাঝে সমস্যা লেগেই থাকত। জানতে পারলাম শিশুটি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় পাওয়া গেছে। তাকে ফেরত আনার ব্যবস্থ্য গ্রহণ কজরা হচ্ছে।

রাণীনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আল মামুন জানান, শিশুটিকে আমাদেও হেফাজতে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে সে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেফাজতে আছে।

Related Articles

Back to top button